দৈনিক ইত্তেফাক- ২৬ মে, রবিবার সংখ্যার নবম পৃষ্ঠা 'নতুন প্রজন্মের ভাবনা' এর মতামত অংশে প্রকাশিত লেখা-
-
https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/opinion/57191/সফলতা-অর্জনে-চাই-নিরবচ্ছিন্ন-সাধনা
-
সফলতা অর্জনে চাই নিরবচ্ছিন্ন সাধনা
মো. এনামুল হাসান কাওছার
০০:০০, ২৬ মে, ২০১৯
সফলতার মতো এমন পরশপাথরের খোঁজে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ হন্যে হয়ে বেড়ায়। ছোটবেলা থেকে যখন মাতৃভাষার সঙ্গে আমাদের যোগসাজশ হয়েছে তখন থেকেই আমাদের অবচেতনে কিংবা চেতনে ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ বাণীটি চিন্তা ও মননে গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ।
যখন হাঁটতে পারতাম না, হোঁচট খেয়ে বার বার পড়ে যেতাম সেদিন হাল না ছাড়ার প্রত্যয় ছিল বলে আজ আমরা হাঁটতে শিখেছি। তখন আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আর নিরবচ্ছিন্ন সাধনা না থাকলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ব্যথাতুর যন্ত্রণার গ্লানিবোধ ছিন্ন করে এগিয়ে চলার প্রেরণাটুকু বিলীন হয়ে যেতো।
একটা স্বপ্নের পিছু ছুটে সেটাকে তাড়া করে যখন নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসি তখন সেটা আমাদের কাছে সফলতা হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে আমাদের মেধা, মনন আর পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যুক্তি ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যখন জীবন পরিচালনা করি তখন আমাদের হাতে স্বপ্নগুলো তুলনামূলক সহজে সাধ্যের মধ্যেই ধরা দেয়।
সফলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকটি অতি মূল্যবান শব্দ—স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম, নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, আত্মবিশ্বাস আর বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাব। শব্দগুলোর সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত কিন্তু শব্দগুলোর গভীরতা সম্পর্কে আমরা অনেকক্ষেত্রেই উদাসীন মনোভাব পোষণ করি।
পৃথিবীর সবাই সফল হতে চায় এটা যেমন ধ্রুব সত্য বিপরীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম ও নিরবচ্ছিন্ন সাধনায় সম্পৃক্ত হতে বিমুখ। স্বপ্নটাই যদি না দেখেন যে আপনি কি হতে চান কিংবা একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনার অবস্থান কি হবে তাহলে আপনি কি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন? পরিকল্পনা ব্যতীত পরিশ্রম বোকার রাজ্যে বিচরণ ছাড়া কিছু নয়। আর পরিশ্রম যদি পরিকল্পনা ব্যতীত নিরবচ্ছিন্নভাবে করেন তথা সাধনায় নিমজ্জিত হোন তবু সাধ্যি অর্জনে সক্ষমতা অর্জন কষ্টসাধ্য।
কিন্তু ‘ভাগ্য’ শব্দটায় যে আমাদের অগাধ বিশ্বাস সেটার কি হবে? যদি ভাগ্যগুণে কপাল খুলে যাওয়ায় বিশ্বাসী হোন তাহলে আপনার সফলতা অর্জনের পথ ক্রমে ক্ষীয়মাণ হবে। আপনি নিয়তিকে অগ্রাহ্য করে নয় বরং ভাবুন সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সাধনায় সম্পৃক্ত থাকলে আপনার সফলতা অর্জনের পথ ক্ষয়িষ্ণু নয় বরং ক্রমে বর্ধিষ্ণু হবে।
বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাব পোষণ সফলতা অর্জনের অন্যতম পাথেয়। ‘আমি মনে হয় পারবো না।’ ‘আমার দ্বারা এই কাজ অসম্ভব।’ ‘সে যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে তা আমি পাচ্ছি না, কাজেই আমি তো এমনিতেই পিছিয়ে আছি, আমি কিভাবে পারবো?’ ‘সে বলেছে আমার দ্বারা এই কাজ হবে না।’
অন্যের কথাকে আমরা যতটা গুরুত্বসহকারে নিই তার বিপরীতে নিজের চাওয়াপাওয়াকে কতটুকু প্রাধান্য দেই? কারো গঠনমূলক সমালোচনা থেকে শিক্ষা নেওয়া ইতিবাচক কিন্তু নেতিবাচক কথাগুলোকে আঁকড়ে ধরে স্বীয়শক্তি বিনাশে উদ্বুদ্ধ হওয়া অযৌক্তিক। ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে জীবন পরিচালনা করলে অনেক বাধা-বিপত্তি আত্মবিশ্বাসের জোরে এড়িয়ে চলা যায়। অথচ অতি আত্মবিশ্বাসী মনোভাব আমাদের বিপথগামী করে তুলে।
কাজেই, সফলতা অর্জনে চাই স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম, নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, আত্মবিশ্বাস আর বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাবের সংমিশ্রণে লেগে থাকার প্রত্যয়।
লেখক :শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
-
https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/opinion/57191/সফলতা-অর্জনে-চাই-নিরবচ্ছিন্ন-সাধনা
-
সফলতা অর্জনে চাই নিরবচ্ছিন্ন সাধনা
মো. এনামুল হাসান কাওছার
০০:০০, ২৬ মে, ২০১৯
সফলতার মতো এমন পরশপাথরের খোঁজে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ হন্যে হয়ে বেড়ায়। ছোটবেলা থেকে যখন মাতৃভাষার সঙ্গে আমাদের যোগসাজশ হয়েছে তখন থেকেই আমাদের অবচেতনে কিংবা চেতনে ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ বাণীটি চিন্তা ও মননে গেঁথে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ।
যখন হাঁটতে পারতাম না, হোঁচট খেয়ে বার বার পড়ে যেতাম সেদিন হাল না ছাড়ার প্রত্যয় ছিল বলে আজ আমরা হাঁটতে শিখেছি। তখন আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আর নিরবচ্ছিন্ন সাধনা না থাকলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ব্যথাতুর যন্ত্রণার গ্লানিবোধ ছিন্ন করে এগিয়ে চলার প্রেরণাটুকু বিলীন হয়ে যেতো।
একটা স্বপ্নের পিছু ছুটে সেটাকে তাড়া করে যখন নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসি তখন সেটা আমাদের কাছে সফলতা হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার অনেকক্ষেত্রে আমাদের মেধা, মনন আর পঞ্চ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যুক্তি ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যখন জীবন পরিচালনা করি তখন আমাদের হাতে স্বপ্নগুলো তুলনামূলক সহজে সাধ্যের মধ্যেই ধরা দেয়।
সফলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকটি অতি মূল্যবান শব্দ—স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম, নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, আত্মবিশ্বাস আর বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাব। শব্দগুলোর সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত কিন্তু শব্দগুলোর গভীরতা সম্পর্কে আমরা অনেকক্ষেত্রেই উদাসীন মনোভাব পোষণ করি।
পৃথিবীর সবাই সফল হতে চায় এটা যেমন ধ্রুব সত্য বিপরীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম ও নিরবচ্ছিন্ন সাধনায় সম্পৃক্ত হতে বিমুখ। স্বপ্নটাই যদি না দেখেন যে আপনি কি হতে চান কিংবা একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনার অবস্থান কি হবে তাহলে আপনি কি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন? পরিকল্পনা ব্যতীত পরিশ্রম বোকার রাজ্যে বিচরণ ছাড়া কিছু নয়। আর পরিশ্রম যদি পরিকল্পনা ব্যতীত নিরবচ্ছিন্নভাবে করেন তথা সাধনায় নিমজ্জিত হোন তবু সাধ্যি অর্জনে সক্ষমতা অর্জন কষ্টসাধ্য।
কিন্তু ‘ভাগ্য’ শব্দটায় যে আমাদের অগাধ বিশ্বাস সেটার কি হবে? যদি ভাগ্যগুণে কপাল খুলে যাওয়ায় বিশ্বাসী হোন তাহলে আপনার সফলতা অর্জনের পথ ক্রমে ক্ষীয়মাণ হবে। আপনি নিয়তিকে অগ্রাহ্য করে নয় বরং ভাবুন সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সাধনায় সম্পৃক্ত থাকলে আপনার সফলতা অর্জনের পথ ক্ষয়িষ্ণু নয় বরং ক্রমে বর্ধিষ্ণু হবে।
বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাব পোষণ সফলতা অর্জনের অন্যতম পাথেয়। ‘আমি মনে হয় পারবো না।’ ‘আমার দ্বারা এই কাজ অসম্ভব।’ ‘সে যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে তা আমি পাচ্ছি না, কাজেই আমি তো এমনিতেই পিছিয়ে আছি, আমি কিভাবে পারবো?’ ‘সে বলেছে আমার দ্বারা এই কাজ হবে না।’
অন্যের কথাকে আমরা যতটা গুরুত্বসহকারে নিই তার বিপরীতে নিজের চাওয়াপাওয়াকে কতটুকু প্রাধান্য দেই? কারো গঠনমূলক সমালোচনা থেকে শিক্ষা নেওয়া ইতিবাচক কিন্তু নেতিবাচক কথাগুলোকে আঁকড়ে ধরে স্বীয়শক্তি বিনাশে উদ্বুদ্ধ হওয়া অযৌক্তিক। ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে জীবন পরিচালনা করলে অনেক বাধা-বিপত্তি আত্মবিশ্বাসের জোরে এড়িয়ে চলা যায়। অথচ অতি আত্মবিশ্বাসী মনোভাব আমাদের বিপথগামী করে তুলে।
কাজেই, সফলতা অর্জনে চাই স্বপ্ন, সুপরিকল্পনা, পরিশ্রম, নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, আত্মবিশ্বাস আর বুদ্ধিদীপ্ত ইতিবাচক মনোভাবের সংমিশ্রণে লেগে থাকার প্রত্যয়।
লেখক :শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
No comments:
Post a Comment